বিটরুট নামের গাঢ় গোলাপি বা লালচে রঙের সবজিটি এখনও আমাদের দেশে খুব পরিচিত না। তবে বাজারে দেখলে কিনতে চান না অনেকেই। শীতকালে এ সবজির উৎপাদন বেশি হলেও বর্তমানে সবসময়ই এ সবজির দেখা মেলে।স্বাস্থ্য রক্ষাতেও অসাধারণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বিটকে অনেকেই “সুপারফুড” বলে থাকেন। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় বিটরুট রাখলে শরীর সুস্থ থাকে এবং নানা রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
![]() |
বিটরুটের উপকারিতা |
আপনার খাবারের তালিকায় ভালো কিছু যোগ করতে চাইলে বিটরুট যোগ করতে পারেন। কারণ এ থেকে পাবেন একাধিক উপকার। খেতেও মজা। বিট রান্না করে খাওয়া যায় আবার সালাদ বানিয়েও খাওয়া যায়। বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন এ সবজিটিকে সুপারফুডও বলা হয়ে থাকে।
বিটরুটের পুষ্টি উপাদান
ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর বিটরুট। এতে রয়েছে আয়রন, জিংক, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফোলেট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি।
বিটরুটের প্রধান পুষ্টিগুণ
-
ভিটামিন: ভিটামিন A, B6, C ও ফলেট সমৃদ্ধ।
-
খনিজ: আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস রয়েছে।
-
ফাইবার: পাচনতন্ত্র ভালো রাখে।
-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বেটালাইন ও নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা শরীরকে ভেতর থেকে ডিটক্সিফাই করে।
বিটরুটের স্বাস্থ্য উপকারিতা
-
রক্তশূন্যতা দূর করে
বিটরুটে প্রচুর আয়রন থাকায় এটি হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। -
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
বিটরুটে থাকা প্রাকৃতিক নাইট্রেট রক্তনালী প্রসারিত করে, ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। -
হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক
এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে। -
পাচনশক্তি বৃদ্ধি করে
বিটরুটে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় ও হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। -
লিভার পরিষ্কার করে
বিটরুট লিভারকে ডিটক্সিফাই করে এবং এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। -
শক্তি ও সহনশীলতা বাড়ায়
বিটরুটের প্রাকৃতিক নাইট্রেট শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে ব্যায়াম বা কাজের সময় শক্তি জোগায়। -
ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যে উপকারী
ভিটামিন C ও আয়রন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং চুল পড়া প্রতিরোধ করে। -
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
বিটরুটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। -
স্মৃতিশক্তি উন্নত করে
বিটরুট মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, যা বয়সজনিত স্মৃতিভ্রংশ প্রতিরোধে সহায়ক।
সতর্কতা
-
যাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা আছে, তাদের অতিরিক্ত বিটরুট খাওয়া ঠিক নয়, কারণ এতে অক্সালেট থাকে।
-
বিটরুট খাওয়ার পর প্রস্রাব বা মল লালচে হতে পারে, এটি স্বাভাবিক।
👉 সারসংক্ষেপে বলা যায়, বিটরুট হলো পুষ্টিগুণে ভরপুর এক প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যরক্ষক খাদ্য, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ থেকে শুরু করে হৃদরোগ, হজম, ত্বক ও স্মৃতিশক্তি— সবকিছুতেই কার্যকর।