ভূমিকা
পার্থেনন (Parthenon) হলো প্রাচীন গ্রিসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্যকীর্তি, যা এথেন্স নগরীর আকরোপলিসে অবস্থিত। এটি শুধু একটি মন্দির নয়, বরং গ্রিক সভ্যতার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকলার প্রতীক হিসেবে বিশ্বে পরিচিত।
![]() |
পার্থেনন |
পার্থেনন কে নির্মাণ করেছিলেন?
খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে এথেন্স নগরীর শাসক পেরিক্লিসের উদ্যোগে পার্থেননের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর নকশা করেছিলেন স্থপতি ইক্টিনাস (Ictinus) ও কালিক্রেটিস (Callicrates)। ভাস্কর্য অলঙ্করণের দায়িত্বে ছিলেন খ্যাতনামা শিল্পী ফিডিয়াস (Phidias)। খ্রিস্টপূর্ব ৪৪৭ সালে এর কাজ শুরু হয় এবং ৪৩২ খ্রিস্টপূর্বে সমাপ্ত হয়।
পার্থেননের উদ্দেশ্য
এটি মূলত এথেনা দেবীর মন্দির হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এথেনা ছিলেন জ্ঞানের, শিল্পের ও যুদ্ধকৌশলের দেবী, যিনি এথেন্স নগরীর রক্ষাকর্ত্রী বলে বিবেচিত হতেন। মন্দিরের ভেতরে ফিডিয়াস নির্মিত এথেনার বিশাল সোনার ও হাতির দাঁতের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল।
পার্থেনন কেন গ্রীসের কাছে গুরুত্বপূর্ণ?
১. ঐতিহাসিক প্রতীক – পার্থেনন প্রাচীন গ্রীসের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামরিক শক্তির প্রতিফলন।
২. শিল্প ও স্থাপত্যের নিদর্শন – এতে ব্যবহৃত ডোরিক স্থাপত্যশৈলী, অনন্য ভাস্কর্য ও খুঁটিনাটি নিখুঁত কারুকাজ গ্রিক শিল্পকলার সর্বোচ্চ অর্জন।
৩. সাংস্কৃতিক পরিচয় – এটি গ্রীসের জাতীয় ঐতিহ্য, যা গ্রিক জনগণকে তাদের গৌরবময় অতীতের কথা মনে করিয়ে দেয়।
৪. পর্যটন কেন্দ্র – আজও এটি বিশ্বের কোটি পর্যটকের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান এবং গ্রিক অর্থনীতিতেও এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
৫. গণতন্ত্রের প্রতীক – পার্থেনন সেই সময়ের এথেন্স নগরীর গণতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়।
উপসংহার
পার্থেনন কেবল একটি মন্দির নয়, বরং প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার মহিমা ও শক্তির প্রতীক। স্থাপত্যশিল্প, ইতিহাস ও সংস্কৃতির অনন্য সমন্বয়ে এটি আজও মানবজাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্য হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। গ্রীসের জন্য পার্থেনন শুধু অতীতের গৌরব নয়, বরং ভবিষ্যতের প্রেরণার উৎস।