পাথরকুচিতে পাইলস্ ও অর্শ রোগের উপশম

প্রকৃতির দান পাথরকুচি (বৈজ্ঞানিক নাম: Bryophyllum pinnatum) আমাদের চারপাশে সহজলভ্য একটি ঔষধি গাছ। এটি শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, বরং বহু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসায় যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে পাইলস্ বা অর্শ রোগে পাথরকুচির গুণ অসাধারণ।     

পাথরকুচিতে পাইলস্ ও অর্শ রোগের উপশম
পাথরকুচিতে পাইলস্ ও অর্শ রোগের উপশম 
                                                                                                                                                            পাথরকুচি গাছের পাতা সাধারণত মাংসল ও মসৃণ। পাতার আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো। পাতার চারপাশে আছে ছোট ছোট গোল খাঁজ, যার মাধ্যমে নতুন চারা উদ্ভবিত হয়। অনেক সময় গাছের বয়স হলে সেই গাছের খাঁজ থেকে চারা উদ্ভবিত হয়।পাথরকুচি গাছের পাতা মাটিতে ফেলে রাখলে অনায়াসে চারা উদ্ভবিত হয়। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে মাটিতে সহজেই জন্ম নেয়। তবে ভেজা, স্যাঁতসেঁতে জায়গায় দ্রুত বাড়ে। তবে গাছে রয়েছে ডাইগ্রেমনটিয়ানিন ও বুফাডিয়েনোলাইড নামক রাসায়নিক উপাদান, যা শিশুদের ক্ষতি হতে পারে। রোগ প্রতিরোধে পাথরকুচি অতুলনীয়।                                                               

পাইলস্ ও অর্শ রোগ কী?

অর্শ বা পাইলস হলো মলদ্বারের শিরা ফুলে যাওয়া ও রক্তক্ষরণের সমস্যা। দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ঝাল-তেলযুক্ত খাবার এবং কম পানি খাওয়ার কারণে এ রোগ দেখা দেয়। এতে মলত্যাগে কষ্ট হয়, অনেক সময় ব্যথা ও রক্তপাত হয়।

পাথরকুচি গাছের পাতার ওষুধি গুণাগুণ:

১. পাথরকুচি পাতা কিডনি ও গলগণ্ডের পাথর অপসারণে সাহায্য করে। 

২. দু-চামচ পাথর কুচি পাতার রস, আধা কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দুবেলা খেলে জ্বালাপোড়া উপশম হয়। 

৩. লিভারের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করতে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর জুস অনেক উপকারী। ৪. পাথরকুচির পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

৫. পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস্ ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৬. ত্বক সুস্থ রাখতে পাথরকুচি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বকে পরিমাণগত পানি সরবরাহ করে এবং ব্রণ ও ফুসকুড়ি জাতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৭. মৃগী রোগাক্রান্ত সময়ে পাথর কুচির পাতার রস মুখে লাগানো যেতে পারে, যা রোগের উপশম করতে সাহায্য করে।

৮. শিশুর পেটব্যথা হলে, পাথর কুচির পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথা কমে যেতে পারে।

পাইলসের উপশমে পাথরকুচির ব্যবহার

  1. পাতার রস খাওয়া

    • সকালে খালি পেটে ১-২টি টাটকা পাথরকুচির পাতা ভালোভাবে ধুয়ে চিবিয়ে খেলে অর্শের প্রদাহ কমে।

    • চাইলে পাতার রস বের করে আধা কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়।

  2. পাতার লেপ

    • পাথরকুচির পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে মলদ্বারের চারপাশে লাগালে ফোলা ও ব্যথা কমে।

  3. পাতার ক্বাথ

    • কয়েকটি পাতা পানিতে সেদ্ধ করে ছেঁকে নিলে যে ক্বাথ পাওয়া যায়, তা নিয়মিত পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে এবং রক্তপাত বন্ধে সহায়তা করে।

সতর্কতা

  • অতিরিক্ত সেবন করা ঠিক নয়; দৈনিক ২-৩টির বেশি পাতা খাওয়া উচিত নয়।

  • কারও শরীরে যদি আগে থেকেই অ্যালার্জি বা হজমের সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা ভালো।

  • এটি সহায়ক ভেষজ চিকিৎসা, তবে দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর অর্শ রোগের জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

উপসংহার:
পাথরকুচি একটি প্রাকৃতিক ও সহজলভ্য ভেষজ, যা পাইলস্ বা অর্শ রোগে দারুণ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এটি একক সমাধান নয়—সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান ও নিয়মিত ব্যায়ামের সঙ্গে ব্যবহার করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়।

Sourov Store

"Ritu IT | Ritu Vlogs: Where tech meets vlogs in perfect harmony! Join Ritu on a dynamic exploration of information technology and captivating daily adventures. Subscribe now for a seamless fusion of IT insights and entertaining vlogs!"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন