অনেক শিশুই দুধ খেতে পছন্দ করে না। অথচ দুধে রয়েছে শরীরের বৃদ্ধির জন্য দরকারি ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন। তাই অনেক মা–বাবা চিন্তায় পড়ে যান—দুধের বিকল্প কী হতে পারে? এর সহজ সমাধান হতে পারে কলার শেক। এটি শুধু সুস্বাদু নয়, বরং শক্তি ও পুষ্টিতে ভরপুর এক স্বাস্থ্যকর পানীয় যা শিশু থেকে বড় সবাই খেতে পারেন।
![]() |
দুধ নয়, কলার শেক কেন খাওয়াবেন সন্তানকে |
কলার শেকে কী কী উপকারিতা রয়েছে
১. প্রাকৃতিক শক্তির উৎস
কলায় থাকে প্রাকৃতিক চিনি যেমন ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ ও সুক্রোজ—যা শরীরকে দ্রুত শক্তি দেয়। সকালের নাস্তার পর কিংবা বিকেলের নাস্তা হিসেবে কলার শেক খেলে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর থাকে সতেজ।
২. পেশি ও হাড় মজবুত করে
দুধের সঙ্গে কলা মিশিয়ে তৈরি শেকে থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড়, দাঁত ও পেশি শক্ত করে। বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্য এটি দারুণ উপকারী।
৩. মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক
কলায় থাকা ভিটামিন বি৬ ও ট্রিপটোফ্যান শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে ও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। পরীক্ষার সময় বা পড়াশোনার চাপের মধ্যে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য কলার শেক হতে পারে আদর্শ পানীয়।
৪. হজমে সহায়তা করে
কলায় আছে প্রচুর ফাইবার, যা হজমে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। যেসব শিশুর হজম সমস্যা আছে, তাদের জন্য নিয়মিত কলার শেক খুব উপকারী।
৫. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
কলায় পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি শরীরের অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
৬. ওজন বাড়াতে সাহায্য করে
যেসব শিশু বা কিশোর-কিশোরীরা খুব রোগা, তাদের জন্য কলার শেক কার্যকর। কলা ও দুধে থাকা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট শরীরে স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি করে।
কলার শেক বানানোর সহজ রেসিপি
-
১টা পাকা কলা
-
১ কাপ ঠান্ডা দুধ
-
১ চা চামচ মধু (ইচ্ছেমতো)
-
সামান্য বরফ
👉 সব উপকরণ একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।– ব্যস, তৈরি স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু কলার শেক!
কিছু সতর্কতা
-
রাতে ভারি খাবারের পরপরই কলার শেক খাওয়া ঠিক নয়।
-
যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা মধু বা চিনি এড়িয়ে চলবেন।
-
অতিরিক্ত পরিমাণে প্রতিদিন খেলে ওজন দ্রুত বেড়ে যেতে পারে, তাই পরিমিতভাবে পান করুন।
রাতে ভারি খাবারের পরপরই কলার শেক খাওয়া ঠিক নয়।
যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা মধু বা চিনি এড়িয়ে চলবেন।
অতিরিক্ত পরিমাণে প্রতিদিন খেলে ওজন দ্রুত বেড়ে যেতে পারে, তাই পরিমিতভাবে পান করুন।
উপসংহার
দুধ না খেলে এখন আর চিন্তার কিছু নেই। কলার শেক হলো এক পুষ্টিকর ও সহজ বিকল্প, যা শিশুদের পছন্দের সাথেই শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে দুধের পুষ্টি যেমন রয়েছে, তেমনি কলার প্রাকৃতিক শক্তিও আছে।
সুতরাং, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কলার শেক রাখলে শিশুর বৃদ্ধি, হাড়ের গঠন ও মস্তিষ্কের বিকাশ—সবই হবে সুষমভাবে।