প্রকৃতির দান বীজ শুধু খাবারের পুষ্টিগুণেই নয়, সৌন্দর্যচর্চাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। ভেতর থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি এগুলো ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন বীজ অন্তর্ভুক্ত করলে প্রাকৃতিকভাবেই ত্বক উজ্জ্বল ও চুল মজবুত হয়ে ওঠে।ত্বক ও চুলের যত্নে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার করা হয়। এসব উপাদান ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চুলের সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে কার্যকরী।
 |
ত্বক ও চুলের যত্নে বীজ |
নিচে এরকম কিছু বীজের নাম ও উপকারিতা দেয়া হল:
১) চিয়া বীজ
চিয়া বীজ
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের গুণে ভরপুর চিয়া বীজ হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ধমনী দেওয়ালে জমে থাকা চটচটে পদার্থ সহজেই শরীর থেকে বের করে দেয়। হজমের সমস্যা থাকলে তা-ও নিয়ন্ত্রণে রাখে এই বীজ। এর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকে বয়সের ছাপ সহজে পড়তে দেয় না এবং দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
২) তিসি
তিসি
চিয়ার মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি। তিসিতে রয়েছে লিগনান্স নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই লিগনান্স বহু ক্ষেত্রে ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করেছে। এটি ত্বকের ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসাবেও কাজ করে। তিসির বীজ থেকে তৈরি তেল ত্বকের বলিরেখা দূর করে, শুষ্ক ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে, ত্বকের সংক্রমণ ও ফোলা ভাব প্রতিরোধ করে।
৩) সূর্যমুখী ফুলের বীজ
সূর্যমুখী ফুলের বীজ
নানা ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে সূর্যমুখী ফুলের বীজে। হৃদ্রোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে এই বীজ। ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট যে কোনও ধরনের মারণরোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এই বীজ। এ ছাড়া সূর্যমুখীর বীজ ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস হওয়ায় ত্বকের এলাস্টিসিটি ধরে রেখে ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখে।
৪) কুমড়ার বীজ
কুমড়ার বীজ
কুমড়োর বীজ প্রোটিন, ওমেগা-৬ জাতীয় ফ্যাটি অ্যাসিডের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ডায়াবেটিস থেকে রক্তচাপ— সবই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই বীজ। ম্যাগনেশিয়ামে সমৃদ্ধ এই বীজ ঘুমের সমস্যাও দূরে রাখে। মেনোপজ় অর্থাৎ, ঋতুবন্ধের পর স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমায় কুমড়োর বীজ। কুমড়ার বীজে থাকা ফাইটোকেমিক্যাল নামক এক ধরনের উপাদান চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের ফলিকল মজবুত করে।
৫) তিল
তিল
ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রনে ভরপুর সাদা তিল। এ ছাড়াও, তিলের মধ্যে রয়েছে লিগনান্স নামক একটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। হরমোনের তারতম্যের মহিলাদের যে ধরনের সমস্যা হয়, তা-ও নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বককে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ত্বকের ড্যামেজ রিপেয়ার করে আর্দ্রতা ধরে রাখে।
৬)ফ্ল্যাক্সসিড (তিসি বীজ)
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ।ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং মসৃণতা ফিরিয়ে আনে।মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, ফলে চুল দ্রুত বাড়ে। ব্যবহার পদ্ধতি খাদ্যতালিকায়: সালাদ, স্মুদি, দই বা ভাতের সাথে বীজ মিশিয়ে খাওয়া যায়।
বাহ্যিকভাবে: গুঁড়ো করে ফেসপ্যাক বা হেয়ারপ্যাকে ব্যবহার করা যায়।
👉 নিয়মিত বীজ খাওয়া ও ব্যবহার করলে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, চুল হবে ঘন ও ঝলমলে।