প্রচণ্ড গরম। তারপরও চাঙা থাকার জন্য চা পান করেন অনেকে। অনেকের জন্য এটি আসক্তির মতোই। কিন্তু চা ও কফি গরমে পানিশূণ্যতা তৈরি করে। প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রাম কফি খেলেই আপনার দৈনিক চাহিদা পূরণ হয়। তবে অনেকে এর বেশিই পান করেন, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
চা-কফির আসক্তি কমাবেন যেভাবে
অনেকে ক্যাফেইনের এই আসক্তি কমানোর জন্য চেষ্টা করেন। ক্যাফেইন গ্রহণ কমানোর ফলে মাথাব্যথা, তন্দ্রা, তৃপ্তি কমে যাওয়া, বিষণ্ণতা, অমনোযোগ, বিরক্তি, জড়তা ও দিশেহারা বোধ হওয়ার মতো কিছু উপসর্গ ও অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই অনেকে কফি বা চা পান না করে পারেন না। যদিও মাত্রা কমানোর প্রথম ১০ দিন পার হলে সতেজ অনুভব হতে পারে।
তবে কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করলে এই আসক্তি কমানো যেতে পারে। যেমন:
১. ধীরে ধীরে পরিমাণ কমান
হঠাৎ করে চা–কফি বন্ধ করলে শরীরে কফেইনের ঘাটতি তৈরি হয়, ফলে মাথাব্যথা, ক্লান্তি বা মনমরা ভাব দেখা দিতে পারে। তাই প্রতিদিনের কাপে অল্প অল্প করে পরিমাণ কমান—যেমন, দিনে ৩ কাপ থেকে ২ কাপ, তারপর ১ কাপ।
২. বিকল্প পানীয়ে অভ্যস্ত হন
চা–কফির পরিবর্তে হারবাল টি, গ্রিন টি, লেবুপানি, আদা–মধু মিশ্রিত গরম পানি বা তাজা ফলের রস খাওয়া শুরু করুন। এতে শরীরে পানির ভারসাম্যও বজায় থাকবে, আর কফেইনের ক্ষতি থেকেও মুক্তি পাবেন।
৩. নির্দিষ্ট সময়ে পান করুন
দিনে যত্রতত্র চা–কফি না খেয়ে নির্দিষ্ট সময় বেছে নিন। যেমন, সকালে একবার এবং বিকেলে একবার। রাতে ঘুমানোর আগে চা বা কফি না খাওয়াই ভালো, কারণ এতে অনিদ্রা বাড়ে।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন
অনেক সময় ক্লান্তি বা ঘুমের অভাবে মানুষ কফি খেয়ে জেগে থাকতে চায়। কিন্তু এটি সাময়িক সমাধান। পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক ডায়েট ও হালকা ব্যায়াম শরীরের প্রাকৃতিক শক্তি ফিরিয়ে আনে, ফলে কফেইনের প্রয়োজন কমে যায়।
৫. পুষ্টিকর খাবার খান
খালি পেটে চা–কফি পান করলে গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। তার বদলে ফল, বাদাম, ওটস বা দই জাতীয় খাবার খান। এতে শরীরের শক্তি আসবে, চা–কফির প্রয়োজনীয়তা কমবে।
৬. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শরীরে পানির অভাব হলে ক্লান্তি বা মাথাব্যথা হয়, যা অনেকেই কফির প্রয়োজনে ভেবে পান করেন। প্রতিদিন ৮–১০ গ্লাস পানি পান করলে দেহ হাইড্রেটেড থাকবে এবং কফি বা চা খাওয়ার প্রবণতা কমবে।
৭.ব্যায়াম
ক্যাফেইন না নিলে তো ক্লান্তি থাকেই। তবে ব্যায়াম করলে আড়ষ্টবোধ আর কাজ করবে না। আপনার মস্তিষ্কও কাজ করবে ঠিকভাবে।
এই কয়েকটি সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি ক্যাফেইনের আসক্তি কমাতে পারেন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারেন।
উপসংহার
চা–কফি সম্পূর্ণ বন্ধ করা জরুরি নয়, তবে অতিরিক্ততা থেকে দূরে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ। ধীরে ধীরে পরিমাণ কমিয়ে, স্বাস্থ্যকর বিকল্প গ্রহণ করে এবং সঠিক জীবনযাপন অনুসরণ করলেই সহজে কাটানো যায় চা–কফির আসক্তি।